প্রিয়তম, শুধু চুমুতেই তোমাকে অনেক কিছু বলে ফেলতে পারি আমি। কিংবা এমন কিছুও হয়তো বলি যা ভাষায় কখনও বলা হবে না। তাই, তোমাকে চুমু দেওয়ার অধিকারের জন্য আমাদের এই আন্দোলন। এমনই একটি অনুভূতি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন চীনের নেনজিং ইউনিভার্সিটি অব ফরেস্ট্রির শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনটি হয় ২০০৯ সালে। প্রায় পাঁচ বছর আগে হলেও এই আন্দোলনটির গুরুত্ব রয়ে গেছে এখনও নানান দেশে ও নানান সময়ে। ২০১৪ সালের বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে নতুনদিনের পক্ষ থেকে প্রিয়জনকে চুম্বনের অধিকারের দাবিতে চীনের শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হলো।
চীনের নেনজিং ইউনিভার্সিটি অব ফরেস্ট্রি কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে চুম্বন করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবুও আবেগ মানেনি আইনের কড়াকড়ি। আইন অমান্য করেই নিজেদের আবেগ প্রকাশ করতে থাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এর পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ চুম্বন ঠেকাতে অদ্ভুত এক পদ্ধতির আশ্রয় নিল। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি ব্যবস্থা জারি করল। এই পুলিশের সদস্যরা আবার ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। তাদের কাজ ছিল, কেউ যেন প্রকাশ্যে তার প্রিয়জনকে চুমু দিতে না পারে তা নিশ্চিত করা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই আন্দোলনকে একটি অসভ্য আচরণ বলে দাবি করতে শুরু করে।
এরপরই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করে। আলোচনায়, আড্ডায়, ব্লগে সর্বত্র একটাই দাবি, একটাই প্রশ্ন আলোচিত হতে শুরু করে। তা হল, কেন চাইলেই প্রিয়জনকে চুম্বন করা যাবে না?
ব্লগে শিক্ষার্থীরা যুক্তি দিতে শুরু করলো যে, চুম্বন করলে কোনভাবেই সমাজের আইন ভঙ্গ হয় না। তারা আরও বলতে শুরু করলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চুম্বনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেই পারে। কিন্তু পুলিশি ব্যবস্থা চালু করে কোনভাবেই আমাদের চুম্বনের অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। এরপরই সরব হয়ে উঠে সে দেশের গণমাধ্যম। চুম্বনের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ পেতে থাকে।
এরপর চারটি বছর কেটে যায়। এখনও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রেমিক-প্রেমিকাদের চুম্বন প্রতিহত করার জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়েই গঠিত একটি দল সবসময় পর্যবেক্ষণ করে। কিন্তু তাতে কি আর আবেগ প্রকাশ রুখে দেওয়া যায়! শিক্ষার্থীরা এখনও আগের মতো করেই নিজেদের মতো করে আবেগ প্রকাশ করে। নিজের প্রিয়জনকে চুম্বন করে। এর বিপরীতে চুম্বন প্রতিহত করার জন্য গঠিত টিমটি নিজেদের মধ্য থেকেই ভেঙ্গে পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে ওই টিমের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আসলে কিভাবে চুমু দিলে তা সভ্যতা আর কিভাবে চুমু দিলে তা অসভ্যতা হবে তা নির্ধারণ করা খুব কঠিন। আর, আমাদের তেমন কোন কাজও থাকে না। আমরা কিছু করতে পারি না। আসলে নিজেদেরকেই বড় বেশি অবাঞ্চিত মনে হয়।