অকালে ঝরে যাওয়া ২১ মেধাবী

2016_07_30_08_49_11_hoATiVyJznLCpwiXjx301BJIQmPQhn_original

এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিল সবুজ ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।  কিন্তু মাঝ পথে সব স্বপ্ন ভেঙে খান খান।  দুনিয়া থেকেই বিদায় নিয়েছে তারা।  মাত্র কয়েক বছরেই জীবনের মতো হারিয়ে গেছে ২১ জন মেধাবী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় গত কয়েক বছরে সাতটি তরুণ প্রাণ চলে গেছে।  এছাড়া বিভিন্ন দুর্ঘটনায় চলে গেছে ১৩টি জীবন

সর্বশেষ শুক্রবার (২৯ জুলাই) সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেছে আরাফাত আখতার মিশু নামের এক শিক্ষার্থী।  তার বয়স হয়েছিল মাত্র ২২।  বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।  বৃস্পতিবার ছিল তার জন্মদিন।  খুব উৎসব করেই করেই উদযাপন করা হয়।  কে জানতো এটাই তার শেষ জন্মদিন।  মেধাবী এ মুখ ঘাতক ট্রাকের চাপায় চিরদিনের জন্য চলে গেছে।

গত ২৪ মে ২০১৬, জামিলুর রহমান জিসান নামের আরেক শিক্ষার্থী  চলে গেছে।  বৃষ্টিস্নাত দুপুরে বন্ধুদের সাথে সাঁতার কাটতে নেমেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবের পুকুরে।  সেই যে গেল আর ফিরে এলোনা জিসান।  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের ছাত্র ছিল সে।

গত ২৬  জানুয়ারি ২০১৬, ময়মনসিংহের ভালুকায় ঘাতক ট্রাক কেড়ে নেয় আরেকটি মেধাবী প্রাণ।  তার নাম মো. ইয়াকুব আলী।  বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিল।  এক রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি ফেরার পথে সে নিজেই লাশ হয়ে ফিরে

২০১৪ সালের ২১ মে বুধবার, বিকেল তখন সাড়ে ৫টা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকে ফাতেমা খাতুন ঘুরতে আসেন।  কিন্তু পিকআপ ভ্যান চিরদিনের জন্য তার জীবনটা কেড়ে নেয়।  তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল শনিবার, রফিকুল ইসলাম রোটন।  বাবার কষ্টের সংসারে দুঃখ লাঘব করবেন এমনি আশা। নরসিংদী থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে চলনবিল নামক একটি বাস কেড়ে নেয় তার প্রাণ।  তিনি সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন

একই বছর ১১ অক্টোবর তুরাগ নদীতে বাস উল্টে পড়ে যায়।  আর সেই বাসে ছিলেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মেধাবী ছাত্রী মনোয়ারা খাতুন।

২০১২ সালের ৭ মার্চ, তানজিলা রহমান তন্নী, ঢাকার মোহাম্মদপুরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।  বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন

২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারি, মুরাদুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের ছাদ থেকে পড়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন।  ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন।

২০১০ সালের ২৬ মার্চ, সায়মা সিদ্দিক শিখা।  কুমিল্লার দৌলতপুরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

২০০২ সালের ২২ নভেম্বর বিভাগের পক্ষ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন ঘুরতে।  কিন্তু সিমলা এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় হারিয়ে যায় জাবির মেধাবী তিন প্রাণ।  তারা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হোসনে আরা মোতাহার ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী মুন্নি এবং নাজনীন খান নুপুর।

এছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় আরো অকালে প্রাণ হারান, জাকসুর প্রথম সভাপতি বোরহান উদ্দিন, জাকসুর ২য় সেক্রেটারি মোজাম্মেল হক, ইংরেজি বিভাগে সাকওয়াত কবির দিপু ও অনন্দ কুমার ঘোষ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সোহান উল হাসান, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের বোরহানুল কবির, ফার্মেসি বিভাগের আহমেদ হোসেন বেলাল।

মন্তব্য