বাঁশখালীর আন্দোলন ১৫ দিনের জন্য স্থগিত

2016_04_08_19_03_40_VyzkMFJ1gDuO91i5D6vzVyj5rwCgE2_original

চট্টগ্রাম : বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিলে সরকারকে ২৫ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে উল্টো ১৫ দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেছে স্থানীয় ‘বসতভিটা ও কবরস্থান রক্ষা কমিটি’।

শনিবার বিকেলে স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুলিশ ও সরকারের অনুরোধে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী।

এর আগে সাতকানীয়া সার্কেলের এসপি কামরুল হাসান, বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ কবির লিটনের সঙ্গে বৈঠক হয় ‘বসতভিটা ও কবরস্থান রক্ষা কমিটি’র।

বৈঠক প্রসঙ্গে এসপি কামরুল হাসান বাংলামেইলকে বলেন, ‘প্রকল্প এলাকায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তদন্ত করা হবে। তারা যদি বলে এই বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হবে তাহলে তা সরিয়ে নেয়া হবে। আর এই আশ্বাসের ভিত্তিতেই আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছে ‘বসতভিটা ও কবরস্থান রক্ষা কমিটি’।’

এদিকে কমিটির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন, ‘পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্বাসে আন্দোলন ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করবেন। প্রতিবেদনে পরিবেশ ও মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না এমন নিশ্চয়তা পেলেই জনগনের মতামতের ভিত্তিতে আন্দোলনে থেকে সরে আসা হবে, অন্যথায় আবারো আন্দোলন শুরু হবে।’

আগের ঘোষণা অনুযায়ী, আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে রোববার সকাল থেকে কাফনের কাপড় পরে উপজেলা কার্যালয় ঘেরাও করার কথা ছিল।

উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল গণ্ডামারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধীদের সাথে পক্ষের লোকজন ও পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে চার গ্রামবাসী নিহত হন। এরপর সেই আন্দোলন আরো জোরালো হয়।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আজ শনিবার চট্টগ্রামে গিয়ে বলে এসেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেবে না। তবে কর্মসূচির নামে যদি কোনো অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে কার গুলিতে তারা মারা গেছে। কেননা, সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে, নিয়ন্ত্রণে পুলিশও কাজ করেছে। সে কারণে তদন্তের আগে এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘যারা মিথ্যা প্ররোচনা করছে, ষড়যন্ত্র করছে, কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তবে বিদ্যুৎপ্রকল্প বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানতে চাইলে মন্ত্রী এ বিষয়ে মুখ খুলেননি। শুধু বলেছেন, ‘এই বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। আর যদি প্রয়োজন হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে পারেন।’

মন্তব্য