সাতক্ষীরা উপকূলে সতর্কতায় লাল পতাকা
সাতক্ষীরা: ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় এলাকাজুড়ে লাল পতাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবস্থানরত মাছধরা ট্রলার ও জেলেদের নৌকাগুলোকে নিরাপদ স্থানে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জেলায় অবস্থিত শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। শ্যামনগর ও আশাশুনির সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে। অন্তত ৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কমিটির সভায় সিপিপির টিম লিডার কর্তৃক প্রচারিত ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা মসজিদে প্রচার করার জন্য বলা হয়। সাইক্লোন সেল্টারে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ রাখা হচ্ছে। প্রত্যেক উপজেলায় মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপি বাহিনীকে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলায় প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার ও পানি মজুদ রাখতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষের সাথে গবাদিপশু সঙ্গে নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানান, সভায় দুই উপজেলায় সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে সার্বক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেক বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা শহরসহ প্রত্যেক উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) খোলা হয়েছে। এছাড়া মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে লাল পতাকা উড়িয়ে জনগণকে সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্থানীয়দের সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও কৈখালি ইউনিয়নের সাইক্লোন সেল্টার খুলে গ্রাম পুলিশ বসানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে বিকেল থেকেই শহরসহ সমগ্র জেলায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির সাথে সাথে বাতাস প্রবাহ হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, রাত ৯টা পর্যন্ত জেলায় ঘণ্টায় ১৬-১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আরো ২ থেকে ৩ দিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। স্কুল কলেজসহ উপজেলার ৮৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গাবুরা, পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও কৈখালিতে বিকেল থেকেই লাল পতাকা উড়িয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সাইক্লোন সেল্টারে গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুস সাত্তার খান জানান, জেলার দুর্যোগ পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। যেকোনো সময় যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত আছে। এছাড়া তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদসহ নগদ অর্থ রয়েছে। উপকূলে মাইকিং করা হয়েছে।