রাঘব বোয়ালদের তথ্য দেয়নি চীনা নাগরিক জো জিয়ান
ঢাকা : প্রাইম ব্যাংকের এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত চীনা নাগরিক জো জিয়ান হুই পুলিশ রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খোলেননি। তিনি কীভাবে এবং কার সহযোগিতায় কার্ড জালিয়াতি করেছেন সে ব্যাপারে পুলিশকে কিছুই বলেননি। এদিকে পালিয়ে যাওয়া দুই সহযোগীকে জো জিয়ান হুই চিনেন না বলেও দাবি করছেন।
তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জো জিয়ান হুই ও তার দুই চীনা সহযোগী মিলে কার্ড জালিয়াতি করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে। দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে ইমিগ্রেশন তল্লাশি করে ইন্টারপুলের সহায়তা নেয়া হবে। শনিবার রিমান্ড শেষে জো জিয়ান হুইকে আদালতে হাজির করবে পুলিশ।
বুধবার ভোরে জো জিয়ান হুই এলিফ্যান্ট রোডে প্রাইম ব্যাংকের একটি বুথে ঢুকে দু’টি এটিএম কার্ড ব্যবহার করে পাঁচ ধাপে ৬৬ হাজার টাকা তুলেছিলেন। সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডের কারণে নিরাপত্তাকর্মীর সহায়তায় র্যাব তাকে আটক করে।
পরে জানা যায়, প্রায় একই সময় তার দুই সহযোগী ফার্মগেট ও পান্থপথের বুথে ঢুকে যথাক্রমে এক লাখ ৯৯ হাজার এবং তিন লাখ ১০ হাজার টাকা তুলে নেয়।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও র্যাব বলছে, মাস্টার কার্ড ক্লোন করে জালিয়াতি করে তিন চীনা নাগরিক। সঁটকে পড়া অপর দুই চীনা নাগরিক বৃহস্পতিবার সকালে মালয়েশিয়া এয়ারওয়েজের একটি বিমানে করে ঢাকা ছেড়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
ওইদিনই নিউমার্কেট থানায় তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইন এবং দণ্ডবিবিধির জালিয়াতির ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আদালতের নির্দেশে জো জিয়ান হুইকে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘দোভাষীর মাধ্যমে আমরা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে টাকা তোলার কথা স্বীকার করেছে। তবে জালিয়াতির চক্র ও দুই সহযোগীর ব্যাপারে কিছুই বলছে না। এমনকি সে দাবি করে তাদের নাকি চিনে না। তবে মামলার এজাহারে র্যাব যে জালিয়াতির কথা বলেছে তার প্রমাণ মিলেছে। প্রয়োজনে আমরা আসামিকে আবারো রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করবো।’
জানতে চাইলে পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে পলাতক দুজনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের অপরাধ প্রমাণ হলে ইন্টারপুলের মাধ্যমে তাদের ব্যাপারে নোটিশ পাঠানো হবে।’
এদিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘তারা বিভিন্ন দেশ থেকে ক্লোনিং মাস্টার কার্ড দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এর আগে এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া বিদেশি নাগরিকের সঙ্গে এ চক্রের সদস্যদের যোগাযোগের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে কোনো দেশে গিয়ে তারা অল্প সময়ের জন্য অবস্থান করেন। তারা প্রাইম ব্যাংকের তিনটি বুথে ১২টি ক্লোন কার্ড ব্যবহার করে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন।’