ঈদে কূটনীতিকপাড়ায় নিরাপত্তার নতুন ছক
ঢাকা: এবছর বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডে দেশে জঙ্গি তৎপড়তা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে এসব হত্যাকাণ্ড। এরই মধ্যে কূটনীতিকপাড়া হিসেবে পরিচিত গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলা বিষয়টিকে নতুন করে ভাবাচ্ছে। দু’দিন পর ঈদ, রাজধানীও ফাঁকা। এসময় এমনিতেই ঢাকায় অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়।এবারের বিষয়টা আরেকটু ভিন্ন। তাই কূটনীতিকপাড়ার নিরাপত্তা নিয়েও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন, সাজানো হয়েছে নতুন ছক।
এ নিয়ে কথা বলতে বাংলামেইলের পক্ষ থেকে যোগযোগ করা হয় গুলশানের ডিপ্লোমেটিক জোনের পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, ঈদে গুলশানের কূটনীতিক পাড়ায় নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। চেকপোস্টের পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সাদাপোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিও। এমনকি দূতাবাসগুলো চাইলে নিরাপত্তার স্বার্থে স্কট দিতেও প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।
ডিসি বলেন, ‘সবসময়ই কূটনৈতিক পাড়ায় একটু বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। তবে হোলি আর্টিসানে হামলার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে।’
ঈদে বিশেষ কী ধরনের নিরাপত্তা থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈদে রাজধানী ফাঁকা হয়ে যায়। বেড়ে যায় অপরাধ প্রবণতাও। এসব বিষয় মাথায় রেখেই কূটনৈতিক পাড়ার নিরাপত্তা ছক সাজানো হয়েছে।’
কূটনৈতিক পাড়ার প্রবেশের দু’টি পথে বসানো হয়েছে ৪টি চেকপোস্ট। প্রতিটি চেকপোস্টের দায়িত্বে একজন করে সিনিয়র কর্মকর্তা থাকবেন। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই তারা বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের অবগত করবেন, যোগ করেন ডিসি জসিম উদ্দিন।
তিনি আরো বলেন, ‘দূতাবাসগুলো চাইলে তাদের পুলিশ স্কট দেয়ার প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। তাছাড়া এখানে সেক্টরভিত্তিক নিরাপত্তা দেয়া হবে।’
এরআগে, সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের শিকড় খুঁজে বের করবে। নিরাপত্তাবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে ছয় বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে গলাকেটে হত্যা করে।
পরদিন শনিবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী কমান্ডো অভিযান চালালে জিম্মি সঙ্কটের অবসান হয়। দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, ছয় হামলাকারী নিহত হয়েছে, একজন ধরা পড়েছে। এঘটানায় সন্ত্রাস দমন আইনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাও করেছে, যেখানে পাঁচ জঙ্গির নাম উল্লেখসহ মোট ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।