কাজে ফিরলেন চিকিৎসকেরা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় সারা দেশে চিকিৎসকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার-বিচার, নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করাসহ চার দফা দাবিতে গতকাল রোববার সকাল থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ (কর্মবিরতি) পালন করেন দেশের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। পরে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে গতকাল রাত পৌনে আটটার দিকে কর্মবিরতি স্থগিত করে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কাজে ফেরেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসকদের মারধর করা হয়। মৃত শিক্ষার্থীর নাম আহসানুল ইসলাম (২৫)। আহসানুল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। মারধরের ঘটনায় শনিবার বিকেল থেকে গতকাল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করতে হাসপাতালে উপস্থিত হন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। তখন চিকিৎসকদের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সন্ধ্যার দিকে দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জরুরি সেবাসহ কিছু সেবা এখনই চালু করব।’ আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা বলেন, তাঁরা কাজে ফিরেছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেওয়ায় সোমবার রাত আটটা পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
থানায় মামলা
মামলায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিউবিটি) শিক্ষক শাহরিয়ার অর্ণবসহ চারজনের নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অপর তিন আসামি হলেন পলজয়, সিহাব তুর্জ ও সাইমি নাজ শয়ন। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চিকিৎসকদের চার দফা
চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। দাবিগুলো হলো হাসপাতালের মতো জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যেসব ব্যক্তি বা কুচক্রী মহল এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা। দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতায় আনা। নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে অবিলম্বে দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য পুলিশের (আর্মড ফোর্স) মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে হাসপাতালে রোগীর ভিজিটর (ভিজিটর কার্ডধারী) ছাড়া বহিরাগত কাউকে কোনোভাবেই ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়া।