বাজেট বরাদ্দে মুক্ত হবে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম

2016_04_03_22_16_16_E1IEEID9zgDt5Xwxr18A9eT8rgHpn8_original

ঢাকা : সরকারের বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বল্পতা ও প্রকল্পের যথাযথ বাস্তাবায়নের অভাবে শিশুশ্রম কমছে না বরং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম একটি প্রকট সমস্যা হিসেবেই রয়ে গেছে। এমন তথ্যই উঠে এসেছে শিশুশ্রম নিরসনে জাতীয় বাজেট ২০১৫-১৬ বিশ্লেষণ সংক্রান্ত গবেষণায়।

রোববার সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজএবিলিটি (সিএসআইডি) ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যেগে এ গবেষণা তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ সরকারসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিষ্ঠান শিশুশ্রম নিরসনে কাজ করলেও নেই কোনো সুফল। তবে এ সঙ্কট থেকে উত্তরণে সরকারের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে।

অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ডিএফএটি ও ওয়ার্ল্ড ভিশন অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি’ পরিচালিত এ গবেষণার প্রেক্ষিতে সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, যে বার্ষিক ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিশুশ্রম নিরসণ কর্মসূচি প্রণয়নের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য হারে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে।

এছাড়া, বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনা, ৫-১৪ বছরের শিশুকে সরাসরি শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা, প্রতিটি শ্রমজীবী শিশুকে শ্রম থেকে মুক্ত করতে আদর্শ বাজেট ও পৃথক অধিদপ্তর গঠন করা এবং সংশ্লিষ্ট আইনের বাস্তবায়নসহ সরকারি তদন্তের মাধ্যমেই দেশে বিদ্যমান ঝুঁকিপূর্ণ এ শিশুশ্রম নিরসন করা সম্ভব।

গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ।

ড. আবু ইউসুফ বলেন, এসডিজির লক্ষমাত্রা অর্জনে ও শিশুশ্রম শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হলে সরকারকে অবশ্যই প্রতিটি শিশুর জন্য মাসে ৩ হাজার ৬০০ টাকা ও সব শ্রমজীবী শিশুর জন্য বছরে ৩৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেই শিশুশ্রম মুক্ত করা সম্ভব।

এ প্রেক্ষিতে নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে এবং আমলাতান্ত্রিকতাকে দোষারোপ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘এ সরকার শিশুবান্ধব। তাই শিশু সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়ে থাকি। শিশুশ্রমের ক্ষেত্রেও সরকারিভাবে সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করে তা সমাধানের চেষ্টা করবো।’

তবে এ সঙ্কট নিরসনে শিশু অধিদপ্তরের কাজে কেন থেমে আছে সে বিষয়ে নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনারও আশ্বাস দেন সরকারের অর্থপ্রতিমন্ত্রী।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কাজী রিয়াজুল হক, সাংসদ কাজী রোজী, শ্রমজীবী শিশুদের পক্ষে শুভেচ্ছাদূত ও নাট্য ব্যক্তিত্ব ড. ইনামুল হক, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর ডেভিড মন্টেগো এবং অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর চন্দন জেড গোমেজ।

মন্তব্য