ডাক্তাররা মিথ্যা বলছে: তনুর মা

2016_06_12_23_14_58_oioo0HmSD4s3bgUXMkADlu2Fo0JxbF_original

কুমিল্লা: সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম। রোববার সকালের দিকে প্রতিবেদনটি ডাক্তাররা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসের বাইরে সাংবাদিকদের সামনে এমন প্রতিক্রিয়াই দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ডাক্তাররা আমার মেয়ে সম্পর্কে এসব মিথ্যা কথা বলছে। কেননা আমার মায়ে অন্ততঃ ধার্মিক ছিল। আমার সাথে সব কিছু শেয়ার করতো। আমি বারবার এটাও বলেছি আমার মেয়ের নাকে, মাথার পেছনে থেঁতলানো, শরীরে আঘাত আছে।

তনুর মৃত্যুর ৭৪ দিন পর রোববার সকালে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে ময়নাতদন্তকারী ফরেনসিক বোর্ড। প্রতিবেদন সম্পর্কে বোর্ডের প্রধান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, মৃত্যুর আগে তনুর ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্সের’ আলামত পাওয়া গেছে। তবে সেটা ধর্ষণ কি না সে প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেছেন, পচা লাশ পরীক্ষা করে শরীরে আঘাত চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। হত্যার কারণ জানতে আরো পুলিশি তদন্ত প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে তনু হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী গণজাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের কুমিল্লার মুখপাত্র খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যার কারণ এখনও সুষ্পষ্ট নয়। এটি মেনে নেয়া যায় না। আবার আন্দোলনে নামার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

ঘটনার এতো দিন পরও তনু হত্যার তদন্তে এখনও কুলকিনারা করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন নারী নেত্রী দিলনাশি মোহসেন। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমগীর খান বলেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের পর কুমিল্লাবাসী আশা করছে এই মামলাটির আশানুরূপ নিষ্পত্তি হবে।

গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর রক্তক্ত লাশ পাওয়া যায়। এরপর দুইবার হাত বদল করে তদন্তভার এখন সিআইডির কাছে। আর দুইবার ময়নাতদন্তের পর এখনও পাওয়া যায়নি ধর্ষণের আলামত ও  মৃত্যুর সুনিশ্চিত কারণ। তবে সিআইডির করা ডিএনএ টেস্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান। তিন জন পুরুষের বীর্য পাওয়ার কথা জানান তিনি।

এদিকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেনকে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে নিষেধ করা হয়েছে। তনুর ছোট ভাই রুবেল রোববার রাতে মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মন্তব্য