reaching-out-helping-others আপনার কোন কোন বন্ধু কী নিতান্তই স্বার্থপর? তাহলে, আপনার বন্ধুটিকে বলুন, এখন থেকে নিজের স্বার্থেই পরোপকারী হয়ে ওঠতে। কেননা, নিজের সুস্বাস্থ্যের জন্য পরোপকারিতা একটি ভালো ঔষধ।

দীর্ঘজীবন প্রাপ্তি:
২০১৩ সালে ৪০টি আন্তর্জাতিক গবেষণার পর্যালোচনায় বলা হয়- পরোপকারীতা/স্বেচ্ছাসেবীতা আপনার আয়ু কমপক্ষে আরও এক বছর বাড়িয়ে দিতে পারে। পরোপকারি মানুষদের মৃত্যুঝুঁকি ২২ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাওয়ার প্রমাণও আছে। প্রশ্ন উঠতে পারে আপনি পরোপকারীতার পেছনে কত সময় দেবেন?
বেশ কয়েকটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব জ্যেষ্ঠরা বছরে ১০০ ঘন্টা বা তারও বেশি সময় জনহিতকর কাজে দিয়েছেন তাদের মৃত্যুর হার জনসেবাবিমুখ ব্যক্তিদের তুলনায় ২৮ শতাংশ কম। ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটার স্কুল অব সোশ্যাল ওয়ার্কের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষণার সহলেখক এলিজাবেথ লাইটফুট বলেন, “স্বেচ্ছাসেবীতায় বছরে ১০০ ঘন্টা সময়ই দিতে হবে এমন কোন কথা নাই, এই সময় হতে পারে ৭৫ কিংবা ২৫ ঘন্টা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে আপনি নিয়মিত অন্য মানুষের উপকার করার চেষ্টা করছেন কি না? পরোপকারী হয়ে ওঠার সুবিধা সব বয়সের মানুষই পায়।

 

অনির্বচনীয় সুখ অনুভূত হয়:
পরোপকারিতা মস্তিষ্কে সুখানুভূতি নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন ডোপামিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা প্রতিসপ্তাহে বা কয়েক সপ্তাহে অন্তত একদিন ছোট ছোট কিছু সহযোগিতা বা সহমর্মিতামূলক কাজ করেন(বন্ধুকে সাহায্য করা, আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, “থ্যাংক ইউ” নোট লিখা ইত্যাদি), তাদের সমস্ত সত্ত্বা জুড়ে স্বস্তির সুবাতাস বয়ে যায়, অন্যরকম ভাললাগা অনুভূত হয়। অবসাদ কমে যায়। মেজাজ হয় ফুরফুরে।

 

ব্যথা উপশমে কার্যকরী ভূমিকা রাখে: গবেষকরা বলেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে টানা ব্যথায় ভুগছেন তারা যদি একে অন্যকে ব্যথা উপশমে সহায়তা করেন তাহলে উভয়েরই উপকার হয়। প্রত্যেকেই দ্রুত সমস্যা থেকে সহজে বেরিয়ে আসতে পারেন।

 

যদি ব্যথার মাত্রা পরিমাপের জন্যে শূন্য থেকে দশ পর্যন্ত দাগ টানা একটি স্কেল কল্পনা করি, তাহলে সেচ্ছাসেবকদের ব্যথার মাত্রা ৬ থেকে ৪ এ নেমে আসে। অন্য গবেষকরা বলছেন, “যারা টানা ব্যথায় ভুগতেন, তারা নিজেদের অসহায় মনে করতেন। কিন্তু একজন অন্যজনকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে প্রত্যেকের জীবন পাল্টে যাওয়া শুরু হয়। তারা এখন অন্যান্য রোগীদেরকেও একই পরামর্শ দেন। অন্যদের সাহায্য করার মাধ্যমে নিজের অস্বস্তি নিয়ন্ত্রণে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাওয়া যায়”। জনসেবামূলক কাজ উদ্বেগ ও অবসাদ কমিয়ে মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।

 

রক্তচাপ কমিয়ে দেয়:
২০১৩ সালে সাইকোলজি ও এজিং জার্নালের একটি গবেষণায় বলা হয়, পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়স্কদের মধ্যে যারা বিগত বছরে ২০০ ঘন্টা(সপ্তাহে ৪ ঘন্টা) জনহিতকর কাজ করেছেন, ৪ বছর পর তাদের উচ্চরক্তচাপ অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে এবং অন্যদের তুলনায় এই রক্তচাপ কমার হার ৪০ শতাংশ।

মন্তব্য