এরশাদদশম জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির ভূমিকা নিয়ে নিজের মধ্যেই অনেক প্রশ্ন আছে বলে জানালেন খোদ পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদ।

তিনি বলেছেন, সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যরা মন্ত্রিসভায় না গেলেই ভাল হতো বলে তিনি মনে করেন।

অবশ্য এখনো জাতীয় পার্টিতে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে এরশাদ দাবি করেছেন।

শনিবার রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতনের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতা ও অভিভাবক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ।

পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এরশাদ বলেন, “দশম জাতীয় সংসদে বিরোধী দল নিয়ে সাধারণ মানুষের যে রকম প্রশ্ন আছে, আমারও সে রকম প্রশ্ন আছে। বিরোধী দলের কাজ সরকারের সমালোচনা করা। এতে সরকার ও জনগণের উপকার হয়।”

নির্বাচন নিয়ে নানা নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে আলোচিত এরশাদ সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েও রংপুর-৭ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

এরশাদের স্ত্রী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ বর্তমান সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হলেও দলের তিন নেতা মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছেন।

এই তিনজন হলেন- পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এবং স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙা।

জাতীয় পার্টির এই দুই ভূমিকা নিয়ে এ নিয়ে বিএনপি ও সুশীল সমাজের একটি অংশ সমালোচনায় মুখর হলেও ক্ষমতাসীন দল ও এরশাদের দলের মন্ত্রিত্ব নেয়া নেতারা এতে ‘কোনো সমস্যা নেই’ বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, “সরকারের সদস্য হিসেবে আমার দলের কিছু মন্ত্রী আছেন। আমি মনে করি, তাদের মন্ত্রিত্ব না নিলেই ভাল হতো। তারপরও দায়িত্ব যেহেতু নিয়েছি, আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করব এবং সরকারের সমালোচনা করব।”

সংসদীয় কমিটিতে থাকবেন কি না জানতে চাইলে এরশাদ বলেন, “কমিটিতে আমি থাকব না। কিন্তু দলের অন্যরা থাকবেন।”

এরশাদ গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও রওশনের ‘নেতৃত্বে’ একটি অংশ নির্বাচনে অংশ নেয় এবং ৩৪টি আসনে জয় পায়। এ নিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি দলের এক বর্ধিত সভায় উষ্মাও প্রকাশ করেন এরশাদ।

যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তাদের ‘আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হওয়ার’ ভয় দেখিয়ে চেয়ারম্যানের আনুগত্যে ‘ফিরতে’ বলেন জাতীয় পার্টির প্রধান।

অবশ্য শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, জাতীয় পার্টিতে তার সিদ্ধান্তই শেষ কথা।

“জাতীয় পার্টির ফাউন্ডার আমি। আগামী নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ দেব আমি। যে যাই করুক, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা আমারই।”

মন্তব্য