আমিরাতকে বড় ব্যবধানে হারাল পাকিস্তান

pak

ঢাকা: এশিয়া কাপের বাছাইপর্বে টানা তিন ম্যাচে জয় তুলে নেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু আসরটির মূলপর্বে এসে সফলতার সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি আমিরাত। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যায় তারা। এই নিয়ে মূলপর্বে টানা তিন ম্যাচে পরাস্ত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত করল মধ্যপ্রাচ্যের দলটি। অপরদিকে আমিরাতের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা লড়াইয়ে টিকে রইল পাকিস্তান।

প্রথমে করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জাভেদের দল আমিরাত করতে সক্ষম হয় ১২৯ রান। জয়ের জন্য তারা পাকিস্তানের সামনে ছুড়ে দেয় ১৩০ রানের টার্গেট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৪ ওভারে (৮ বল হাতে রেখেই) মাত্র ৩ উইকেট খুইয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে পাকিস্তান।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শক্তিশালী পাকিস্তান। দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ১ রানেই পতন ঘটে দুই উইকেটের। প্রথম বিদায় নেন সদ্য সমাপ্ত পিএসএলে দুর্দান্ত ব্যাট করা শারজিল খান। তিন বলে চার রান করে তিনি আমজাদ জাভেদের এলবিডব্লিউর শিকার। দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই কোনো রান না করে সাজঘরে ফেরেন খুররম মানজুর। ওয়ান ডাউনে নামা এই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানকে আউট করেন সেই আমিরাত অধিনায়ক জাভেদই। এর কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন ওপেনার মোহাম্মদ হাফিজ। মাত্র ১১ রান করা এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে তারিকের হাতে ক্যাচ বানান জাভেদ। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে বিদায় করে দিয়ে আমিরাত শিবিরে আনন্দের আবহ বয়ে আনেন দলীয় অধিনায়ক।

কিন্তু আমিরাতের এই আনন্দকে নিরানন্দে পরিণত করেন উমর আকমল ও শোয়েব মালিক। চতুর্থ উইকেটে ১১৪ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটির কল্যাণেই পাকিস্তান পায় দারুণ এক জয়। উমর ও শোয়েব দু’জনই ফিফটি পূর্ণ করেন। ৪৬ বলে দুটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন উমর।  ৪৯ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৯ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন শোয়েব মালিক। ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলার সুবাদে পাকিস্তানের এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের হাতেই ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কার। আমিরাতের পক্ষে সান্ত্বনার উইকেট তিনটি লাভ করেন অধিনায়ক আমজাদ জাভেদ।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পাকিস্তানি বোলারদের তোপে পড়ে আমিরাত। দলীয় ৫ রানের মাথায় ওপেনার রোহান মোস্তফাকে হারিয়ে ফেলে মধ্যপ্রাচ্যের দলটি। মোহাম্মদ সামির শিকার হয়ে রোহান (১) পথ ধরেন প্যাভিলিয়নের। এরপর মোহাম্মদ আমির আঘাত হানেন আমিরাত শিবিরে। তুলে নেন আমিরাতের অপর ওপেনার মোহাম্মদ কালিমকে (১)। পাকিস্তানের পক্ষে তৃতীয়বারের মতো আমিরাতের দুর্গে হানা দেন মোহাম্মদ ইরফান। বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘকায় বোলার সাজঘরে ফেরান মোহাম্মদ শেহজাদকে। পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ তুলে দেয়ার আগে ৫ রান করেন শেহজাদ।

চারে নামা আমিরাতের ব্যাটসম্যান সায়মান আনোয়ার পাকিস্তানের জন্য হুমকি হয়ে উঠছিলেন! কিন্তু ইরফানের ধোপে টিকতে পারলেন না সায়মান। ৪৬ রানেই আমিরাতের এই ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। সায়মানের ৪২ বলের দারুণ ইনিংসটি ছিল পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কায় সমৃদ্ধ। অনেকটা উইকেট সংকটে ভুগতে থাকা শহিদ আফ্রিদিও পেলেন উইকেটের দেখা। ৯ রান করা উসমান মুস্তাককে মোহাম্মদ নওয়াজের তালুবন্দী করান পাকিস্তান অধিনায়ক।

তবে আমিরাতের আরেক উসমান অর্থাৎ মোহাম্মদ উসমান শেষ দিকে ঝড় তোলার চেষ্টা করেন। মোহাম্মদ আমিরের বলে সরাসরি বোল্ড হওয়ার আগে ১৭ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২১ রান করেন মোহাম্মদ উসমান। অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ১৮ বলে তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৭ রান করা আমজাদ জাভেদ। আমিরাত অধিনায়কের মতো পাকিস্তানের বোলারদের কাছে হার মানেননি মোহাম্মদ নাভিদ। ৫ বলে একটি করে চার ও ছয়ে ১০ রান করেন নাভিদ।

পাকিস্তানের পক্ষে সেরা বোলার মোহাম্মদ আমির। ৪ ওভারে একটি মেডেনসহ ৬ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন দুই উইকেট। মোহাম্মদ ইরফানও নিয়েছেন দুটি উইকেট। তবে ৪ ওভারে তিনি খরচ করেছেন ৩০ রান। এ ছাড়া শহিদ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ সামি নিয়েছেন একটি করে উইকেট।

মন্তব্য