বনশ্রীর দুই শিশুর খুনি মা মাহফুজা
ঢাকা : মা মাহফুজা মালেকই রাজধানীর বনশ্রীর দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন। শ্বাসরোধে তাদের হত্যা করা হয়। পরকীয়ার জেরে এ শিশুদের হত্যা করেন মাহফুজা। বুধবার র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের দুই সন্তান হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি। র্যাব-৩ কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এছাড়া র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা রুম্মন মাহমুদ গণমাধ্যমে পাঠানো এক খুদেবার্তায় জানিয়েছেন শিশুদের হত্যায় পরকীয়ার পাশাপাশি মা মাহফুজার মানসিক সমস্যা ও সম্পত্তিগত বিরোধও জড়িত। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানানো র্যাবের পক্ষ থেকে।
গত সোমবার বিকেলে বনশ্রীর ৪ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাসায় দুই ভাই-বোন সিদ্ধেশ্বরীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান অরণি (১৪) ও হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের নার্সারির শিক্ষার্থী আলভি আমানের (৬) মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
জামালপুরের পারিবারিক গোরস্থানে দুই শিশুকে দাফনের পর বুধবার দুপুরে মা মাহফুজা এবং বাবা আমান উল্লাহ মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আনা হয়।
মঙ্গলবার রাতে দুই শিশুর দাফন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাবা আমানউল্লাহ বলেন, ‘আমরা পালাইনি, ভয় পেয়েছিলাম। ঢামেক কর্তৃপক্ষ ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমরা ভয় পেয়ে যাই। তখন ময়নাতদন্তের বিষয়টি আমার স্ত্রী (মাহফুজা মালেক) সহ্য করতে পারবে না বলে তাকে নিয়ে আমি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসি। সেখানে আমাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলো।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলাম। পরে স্ত্রীর ফোন পেয়ে বাসায় এসে দেখি অরণি-আলভি গুরুতর অসুস্থ। আমি তাৎক্ষণিকভাবে প্রথমে আল রাজি হাসপাতালে ও সেখান থেকে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।’
এদিকে রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে দুই ভাই-বোন নিহতের ঘটনায় একজন গৃহশিক্ষিকা, বাড়ির দারোয়ান ও নিহতদের এক স্বজনসহ মোট ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে র্যাব ও পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে এবং সোমবার রাতে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন- অরণি ও আলভির গৃহশিক্ষিকা শিউলি, ওই বাসার দারোয়ান পিন্টু এবং নিহতের এক স্বজন।
এর আগে যে রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে দুই ভাই-বোন মারা গেছে বলে পরিবার থেকে বলা হয়েছিল, সে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ও প্রধান বাবুর্চিসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- ম্যানেজার মাসুদ রহমান, প্রধান বাবুর্চি আসাদুজ্জামান রনি ও তার সহযোগী আতাউর রহমান।