যুক্তরাষ্ট্রে ভুল চিকিৎসায় বছরে আড়াই লাখ রোগীর মৃত্যু

ঢাকা: অন্য সবক্ষেত্রের মতো চিকিৎসা ক্ষেত্রেও বিশ্বের উন্নততম দেশ যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এ দেশটিতেও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ঘটে বড় ধরনের ভুলের ঘটনা। চিকিৎসা বিষয়ক ব্রিটিশ গবেষণা পত্রিকা ‘বিএমজি’র মতে, চিকিৎসার ভুলকে যদি একটি রোগ হিসেবে ধরা হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটানোর তৃতীয় রোগ এটি।

গবেষণায় দেখানো হয়, চিকিৎসাবিভ্রাটে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর হৃদরোগে মারা যায় ছয় লাখ ১১ হাজার, ক্যানসারে মারা যায় পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগে মারা যায় এক লাখ ৪৯ হাজার রোগী। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে ভুল চিকিৎসার কারণে প্রতিদিন ৭০০ জন মারা যায়। হাসপাতালের ভুল, ভুল ওষুধ ও চিকিৎসক-নার্সদের ভুলের কারণে বছরে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে উন্নত এই দেশটিতে, যা বছরের মোট মৃত্যুর সাড়ে ৯ শতাংশ।

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক মার্টিন ম্যাকারি পরিচালিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে চিকিৎসাবিভ্রাটের সব বিষয়কে আমলে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসাসেবা নেয়া অবস্থায় ভুল ওষুধ সেবন করানো, অপচিকিৎসা, অবহেলা, পদ্ধতিগত ত্রুটিসহ চিকিৎসার সময়ে বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়বিভ্রাটকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা মনে করেন, ব্যক্তিগত ভুলের চেয়ে অধিকাংশ ভুলই হচ্ছে চিকিৎসা পদ্ধতিতে। গবেষণাপত্রে দেখানো হয়েছে, অসুখে নয়, রোগী মারা যাচ্ছে প্রত্যাশিত সেবা গ্রহণের ত্রুটির কারণে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোগীর সেবা নিয়ে হাসপাতালসহ সেবাকেন্দ্রগুলো উচ্চকণ্ঠ থাকলেও অবহেলা ও বিভ্রাটে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি তেমন জনসমক্ষে নিয়ে আসা হয় না।

বেথ ইসরাইল মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ক্যানেথ সেন্ডস বলেন, সম্প্রতি চিকিৎসাবিভ্রাটে মৃত্যু নিয়ে অনেক হইচই হলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বিষয়টিকে রীতিমতো উৎকণ্ঠার বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য সেবা খাতের সঙ্গে তুলনা করলে চিকিৎসা খাতে বিভ্রাটকে নমনীয়তার সঙ্গে দেখা হচ্ছে। চিকিৎসাসেবার মান উন্নত করা ও চিকিৎসাবিভ্রাটের কারণে মৃত্যুর বিষয়টি জনসমক্ষে নিয়ে আসা জরুরি বলে মত প্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ক্যানেথ সেন্ডস।

গবেষকদের হিসাব মতে, যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৩ সালে দুই লাখ ৫১ হাজার ৪৫৪ রোগী মারা গেছে চিকিৎসায় ত্রুটিজনিত কারণে। এই সময়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিন কোটি ৫৪ লাখ ১৬ হাজার ২০ জন রোগী।

মন্তব্য