শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে অচল ফ্রান্স
ঢাকা : ফ্রান্সে শ্রম আইন সংস্কার নিয়ে তীব্র বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা এই ধর্মঘটে ফ্রান্স জুড়ে ব্যাপক অস্থিতিশিলতার সৃষ্টি হয়েছে। পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, তেল শোধনাগার, বন্দর ও পরিবহন শ্রমিকরা সবাই মিলে এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কপথ, সেতু এমনকি পরমাণু সাবমেরিন ঘাঁটি পর্যন্ত অবরোধ করে রেখেছে।ফলে পরমাণু শক্তি কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদনের গতি কমে গেছে।
অবরোধে প্যারিস, নন্টস ও তুলুজ বিমানবন্দরে বিমান চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ট্রেন চালকদের অবরোধ করায় আঞ্চলিক ও কম্পিউটার চালিত ট্রেন চলায়ও বিঘ্ন ঘটছে।
এর প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মানুয়েল ভালস স্পষ্ট করে বলেছেন যে ‘প্রস্তাবিত বিল বাতিল করা হবে না’। তবে বিলটি খানিকটা পরিবর্তন করা সম্ভব বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সংস্কার আইনের অনুচ্ছেদ-২ নিয়েই মূলত আপত্তি করেছে শ্রমিকরা। এ অনুচ্ছেদে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় সরকারি যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, প্রয়োজনে যে কোনো কোম্পানি তার ইচ্ছা অনুযায়ী সেগুলোর বিরোধিতা ও পরিবর্তন করতে পারবে।
ফরাসি সরকার শ্রম আইন সংস্কার বিলটি পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়াই পাস করার চেষ্টা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণেই বিরোধিতা শুরু করছে শ্রমিকরা।
কি আছে নতুন এই প্রস্তাবিত বিলে:
- সপ্তাহে গড়ে ৩৫ ঘণ্টা কাজ করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ফার্মগুলো কর্মঘণ্টা বাড়াতে বা কমাতে পারবে। সপ্তাহে সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা ৪৬ ঘণ্টা বলা হয়েছে।
- শ্রমিকদের মজুরি কমানোর ক্ষেত্রে ফার্মগুলোকে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
- শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের শর্তও অনেক সহজ করা হয়েছে। ফ্রান্সে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়।
- শ্রমিকদের ছুটি বা বিশেষ ছুটি (মাতৃত্বকালীন ছুটি বা বিবাহের জন্য ছুটি) দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের আরো বেশি করে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টিও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়।