রাষ্ট্রদ্রোহে আসলামের রিমান্ড শুনানি কাল

2016_05_16_16_19_55_EyleAJxyHE6n9IW0zGFr7XZv7XTYJp_original

ঢাকা: ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে মিলে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এম আসলাম চৌধুরীর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ১০ দিনের রিমান্ড শুনানি আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার (৩০ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ হোসেন রিমান্ড আবেদনের শুনানিকালে হাইকোর্টের একটি আদেশের দুই বিপরীতমুখী ব্যাখ্যার সুযোগ থাকায় শুনানির জন্য মঙ্গলবার ধার্য করে ওই আদেশ দেন।

এছাড়াও মতিঝিল ও লালবাগ থানার নাশকতার দুটি মামলাতেও দুটি পৃথক আদালতে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মামলা দুটির রিমান্ড শুনানি আগামী ৬ জুন ধার্য করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম নবী ও মাযহারুল ইসলাম।এদিন এই তিন মামলায় ১০ দিন করে মোট ৩০ দিনের রিমান্ড করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

প্রথমে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ হোসেনের আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার শুনানি শুরু হলে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা একটি জিডির ভিত্তিতে তাদের করা একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ তুলে ধরেন এবং ওই বিষয়ে সোমবার (৩০ মে) হাইকোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হইবে।

ওই আইনজীবীরা বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক আসলাম চৌধুরীকে আর কোন মামলায় রিমান্ডে নেয়া যাবে না। প্রয়োজনে হাইকোর্টে আজকের শুনানির পর আদেশের আলোকে পরবর্তীতে যেকোনো দিন শুনানি হতে পারে।’ আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লা মিয়া, অ্যাডভোকট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘যে মামলার বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে, আদেশটি কেবল ওই মামলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, সব মামলার ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য এমন কথা আদেশে উল্লেখ নেই।’ রাষ্ট্রপক্ষের পিপিকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, অ্যাডভোকেট শাহ আলম তালুকদার ও অ্যাডভোকেট তাছলিমা ইয়াসমিন দিপা।

এর আগে গত ১৬ মে আসালাম চৌধুরী ও তার সহকারীকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারাফুজ্জামান আনছারী।

আসলাম চৌধুরী গত ৫ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে গনতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বহিভূত রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এর এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। যার কিছু ছবি গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। উক্ত আসামীকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায় যে, ওই সময় ভারতে অবস্থান করে মোসাদ এর এজেন্ট মেন্দির সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বৈঠক করে বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে পুলিশ রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করে।

এর আগে ১৫ মে রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে ওই অভিযোগে আসলাম চৌধুরী এবং মো. আসাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করা হয়।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশ কিছুদিন ধরেই সংবাদ প্রকাশ হচ্ছিল যে, সম্প্রতি ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে নয়াদিল্লিতে একাধিক বৈঠক করেন আসলাম চৌধুরী। ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের সরকার উৎখাত করাই ছিল এসব বৈঠকের উদ্দেশ্য। গলায় ফুলের মালা পরা অবস্থায় সাফাদি ও আসলাম চৌধুরীর একত্রে ছবিও প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে।

এ ছাড়াও একটি রেস্তোরাঁর এক টেবিলে এই দুজনের বসে কথা বলার ছবি প্রকাশিত হয়। ছবিগুলোর উৎস মেন্দি এন সাফাদির ব্যক্তিগত ফেসবুক পাতা ‘মেন্দি এন সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস’। ওই পাতায় মেন্দি নিজেই ছবিগুলো প্রকাশ করেন।

গণমাধ্যমে এসব বৈঠকের ছবি ও খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতারা এটাকে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিএনপির সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যা দেন।

এরপর গত ১৩ মে আসলাম চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, তিনি গত মার্চে ব্যক্তিগত সফরে ভারতে গেলে অন্য একজনের মাধ্যমে সাফাদির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় একসঙ্গে ঘুরেছেন, খাওয়া দাওয়া করেছেন, কিন্তু কোনো বৈঠক করেননি।

মন্তব্য