ভুয়া এসএমএস দিয়ে বিকাশ গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র

2016_06_21_17_58_55_fqnh8FHnfD8OEMljXk5TvkH7HgQ0Y6_original

ঢাকা : মোবাইলে টাকা লেনদেনের জনপ্রিয় মাধ্যম বিকাশ ব্যবহার করে গ্রাহক প্রতারণা বাড়ছে। অভিযোগ করে প্রতিকারও পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। ভুল করে টাকা চলে গেছে এমন নাটকীয় কথায় সরল গ্রাহকদের ফাঁদে ফেলছে প্রতারক চক্র।

ব্র্যাক ব্যাংকের এ সেবা বিভাগটি এ প্রতারণা বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানাতে পারেনি। তবে লেনদেনে গ্রাহকদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ জানালে পুলিশও সচেতন হওয়ার নছিহত করে।

বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান শাওন। মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাত ১২টায় বাসায় ফেরার পথে সাড়ে ৫ হাজার টাকা নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্টে ক্যাশইন করতে মোহাম্মদপুরের কাটাশুরের একটি এজেন্টের দোকানে যান। নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনার কথা বলে দোকানি খানিকটা সময় নিলেও ৫ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। নাহিদকে বাকি ৫শ টাকা ফেরত দেন।

পরের দিন বুধবার (১৫ জুন) ০১৭৬৭৯৪৪৩৩১ নম্বর থেকে ফোন আসে তার কাছে। জানতে পারেন ওই এজেন্টই ফোন দিয়েছেন। দোকানি জানান, তার অ্যাকাউন্ট থেকে ভুলক্রমে আরো ৪ হাজার ৯৫০ টাকা নাহিদের অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। এর কিছুক্ষণ পর ০১৬৩১৪৭৮৩১১ নম্বর থেকে একটি মেসেজ আসে নাহিদের মোবাইলে। মেসেজে সেই ৪ হাজার ৯৫০ টাকা সফলভাবে অ্যাকাউন্টে যোগ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। মেসেজটি পাওয়ার পর ব্যালেন্স চেক না করেই নাহিদ ওই নম্বরে সেই টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে ব্যালেন্স চেক করে দেখেন, তার অ্যাকাউন্ট শূন্য।

ওই এজেন্টকে বিষয়টি জানালে তিনি প্রথমে সমাধান করবেন বললেও পরে বলেন, তার করার কিছুই নেই। উল্টো নাহিদকে বলেন, ‘এমন ঘটনা এখন অহরহ ঘটছে। আমার কিছু করার নেই।’ এ বিষয়ে নাহিদ বিকাশ কর্তৃপক্ষের কাছে গেলে তারা জানান, প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি।

প্রতারণার এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এমন প্রতারণা বেড়েই চলেছে। তাদের প্রতারণার শিকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষই।

এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন চাকরিজীবী ইসমাঈল হোসাইনও। তিনি বাংলামেইলকে জানান, গত মাসের ১০ তারিখ তার ভাগ্নি বিকাশে তাকে ৪ হাজার ৮০ টাকা পাঠায়। কিছুক্ষণ পর ফোন আসে। তাকে বলা হয়, ‘আপনার মোবাইলে ভুলক্রমে আরো ৪ হাজার ৫০ টাকা চলে গেছে।’ খানিক বাদেই মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। যেখানে ওই বাড়তি টাকা অ্যাকাউন্টে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ফলে ইসমাঈল সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে ব্যালেন্স চেক করে দেখেন তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই নেই।

এজেন্টকে ফোন করলে জানানো হয়, বিকাশে যান্ত্রিক সমস্যার কারণে টাকাটি সেখানে জমা হয়ে আছে। এই টাকা তুলতে হলে আপনাকে আরো ২৩ হাজার ৫০০ টাকা পাঠাতে হবে। ইসমাঈল সেই এজেন্টের কথামতো ০১৮৮১১২১১৮৮ নম্বরে ওই টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে সেখানে ফোন দিলে তাকে বলা হয়, ‘কোনো টাকা ফেরত দেয়া হবে না। আমাকে কিছু করতেও পারবি না।’ এভাবেই সরলতার সুযোগে মোট ২৭ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

মন্তব্য