রাজধানীতে দুই নারীকে কুপিয়ে খুন
ঢাকা : রাজধানীর লাগবাগের ইসলামবাগে নানি ও নাতনিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মোহাম্মদ জীবন আহমেদ নামে তাদেরই পরিবারের এক স্বজন। নিহতদের একজন রাশেদা বেগম (৫৫) ও অপরজন তার নাতনি বর্ণা আক্তার (২২)। রাশেদা সম্পর্কে জীবনের শাশুড়ি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে বন্যার খালা অর্থাৎ জীবনের জেঠাস সীমা আক্তার (৩০)।
সোমবার (০৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চকবাজার থানাধীন ইসলামবাগ ছাতি মসজিদ গলির বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিজের ‘সন্তানদের না পেয়ে’ জীবন এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানা গেছে।
বন্যার স্বামী মো. সোহাগ আহমেদ বাংলামেইলকে জানান, বিকেল সোয়া ৩টার দিকে জীবনের সঙ্গে প্রথমে বেগম পরে বন্যার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে শাশুড়ি ও বড় জেঠাসের মেয়ে বন্যাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো শুরু করে জীবন। এ সময় বন্যার খালা সীমা চিৎকার করে উঠলে তাকেও মাথায় ও ঘাড়ে কোপানো হয়।
সোহাগ আরো জানায়, জীবনের স্ত্রী সুমি আক্তার দুই সন্তার রেখে কয়েক বছর আগে মারা যান। নানি হিসেবে রাশেদাই মেয়ে সুমির সন্তানদের লালন-পালন করতেন। কিন্তু সন্তানদের পাওয়ার জন্য বেগমের পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করে জীবন।
তবে সন্তনরা সাবালক না হওয়া পর্যন্ত বেগমের কাছেই লালিত-পালিত হবে বলে রায় দেয় আদালত।
বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত জীবনের সঙ্গে বেগমের পরিবারের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে তার দুই সন্তানকে নেয়ার জন্য জেঠাসের বাসায় আসে জীবন।
এ সময় নিজের সন্তানদের নিয়ে যেতে চাইলে রাশেদা ও তার নাতি বর্ণা জীবনকে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই নানি-নাতনিকে কোপায় জীবন। এতে ঘটনাস্থলেই রাশেদা বেগমের মৃত্যু হয়।বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে বন্যার মেঝো খালা সীমা আক্তারকেও কুপিয়ে আহত করে জীবন।
আহত অবস্থায় বর্ণা ও সীমা আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বন্যার মৃত্যু হয়। সীমা এখনো চিকিৎসাধীন আছেন।
ক্যাম্প পরিদর্শক এসআই বাচ্চু মিয়া বাংলামেইলকে জানান, চকবাজার থানা পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে এবং হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।
লালবাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বিষয়টি বাংলামেইলকে নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলেই রাশেদা বেগমের মৃত্যু হয়। ঢামেকে আনার পর বর্ণার মৃত্যু হয়। আহত সীমা চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীমুর রশিদ বাংলামেইলকে জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে শাশুড়ি ও জেঠাসের মেয়ে অর্থাৎ ভাগ্নিকে কুপিয়ে খুন করেছে জীবন। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।