নিজাম হাজারীর ভাগ্য নির্ধারণ আজ
ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর সংসদ সদস্যপদ চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের রায় ঘোষণা আজ বুধবার। বিকাল ২টায় বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টে বিভাগের কার্যতালিকায় মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য ৩১ নম্বরে রয়েছে।
গত ৩ আগস্ট রিট আবেদনের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৭ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেন আদালত। নিজাম হাজারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শফিক আহমেদ, সাংসদ নুরুল ইসলাম সুজন। রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী এবং সত্য রঞ্জন মণ্ডল।
‘সাজা কম খেটেই বেরিয়ে যান সাংসদ’ শিরোনামে ২০১৪ সালের ১০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়৷ এতে বলা হয়, ২০০০ সালের ১৬ আগস্ট অস্ত্র আইনের এক মামলায় নিজাম হাজারীর ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু দুই বছর ১০ মাস কম সাজা খেটে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে নিজাম হাজারীর সাংসদ পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া। রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬(২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে। সে হিসেবে নিজাম হাজারী ২০১৫ সালের আগে সাংসদ হতে পারেন না। অথচ তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সাংসদ হয়েছেন।
রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৮ জুন হাইকোর্ট রুল দেন। তবে পরে হাইকোর্টের দুটি বেঞ্চে এই রুল শুনানির জন্য কার্যতালিকায় উঠলেও বেঞ্চ দুটি শুনানিতে বিব্রতবোধ করেন। গত ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের এই বেঞ্চে রুল শুনানি শুরু হয়।
এর আগে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী কারা মহাপরিদর্শকের পাঠানো প্রতিবেদন ১৯ জুলাই আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, ১০ বছরের সাজার মধ্যে নিজাম হাজারী সাজা খেটেছেন ৫ বছর ৮ মাস ১৯ দিন। কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাজা রেয়াত পেয়েছেন ১ বছর ৮ মাস ২৫ (৬২৫ দিন)। রেয়াতসহ মোট সাজা ভোগ করেছেন ৭ বছর ৫ মাস ১৪ দিন। এখনো সাজা খাটা বাকি আছে ২ বছর ৬ মাস ১৬ দিন। তিনি মুক্তিপান ২০০৬ সালের ১ জুন।
প্রতিবেদন উপস্থাপনের দিনই (১৯ জুলাই) এর ওপর লিখিত জবাব দেয়ার জন্য নিজাম হাজারীর আইনজীবী আদালতের কাছে সময় চান। সে অনুযায়ী গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হয়। এরপর আজ বুধবার আবারও শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষ ১৭ আগস্ট রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।