planeশুধু যে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট MH 370 অস্বাভাবিকভাবে উধাও হয়েছে তা নয়। ইতিহাসের পাতায় আছে এমন আরও অসংখ্য উদাহরণ। কেন বা কীভাবে ফ্লাইট MH 370 অস্বাভাবিকভাবে উধাও হল তার কারণ এখনও জানা যায় নি। তবে ওই ফ্লাইটে জাল পাসপোর্টধারী দুইজন ব্যক্তির অবস্থান ছিল বলে জানা যায়। আসুন জানি, এমনই আরও ১০টি অস্বাভাবিক বিমান দুর্ঘটনা সম্পর্কে!

এর আগে ১৯৩৭ সালের ২য় জুলাইয়ে পাইওনারিং আমেরিকান এভিয়েটর “এমেলিয়া ইয়ারহার্ট” পৃথিবী প্রদক্ষিণ কালে তার সহকর্মীকে নিয়ে উধাও হন। অনেক মনে করেন, পর্যাপ্ত জ্বালানির অভাবে তার প্লেনটি সমুদ্রে আছড়ে পড়ে। আবার অনেকে মত দিয়েছেন, তিনি তার প্লেনের সাথে জাপানের একটি মালভূমিতে বিলীন হয়ে যান। আরও খবর পাওয়া যায় যে, তিনি প্লেন ক্র্যাশ থেকে বেঁচে ফেরত এসেছেন এবং তার নাম পরিবর্তন করে নেদারল্যান্ড-এ বাস করছেন।

১৯৪৪ সালে জনপ্রিয় বিগ ব্যান্ড লিডার “গ্লেন মিলার” আমেরিকার আর্ম ফোর্স-এ স্ট্রিং পারফর্মেন্স এর জন্য যান। পরদিন প্যারিস যাওয়ার সময় ইংলিশ চ্যানেলের উপর থেকে তার প্লেনটি উধাও হয়ে যায়। অনেকে বলেন অগ্নিবিস্ফোরণের কারণে প্লেনটি ক্র্যাশ করে। তবে সবচেয়ে মজার তথ্যও পাওয়া যায় যে, মিলার নাকি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন।

১৯৪৫ সালে প্রথম বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলের আবির্ভাব ঘটে। ঘটনাটি ছিল ১৪ জন নৌবাহিনীর ট্রেইনির। অভিজ্ঞ পাইলট চার্লস ফ্লোরিডা থেকে গন্তব্যের দিকে যাওয়ার সময় বারমুডার উপর থেকে প্লেনসহ হারিয়ে যান। জানা যায়, আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তনের কারনে প্লেনটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি আর। তবে ভূতুড়ে হলেও সত্যি যে, প্লেনটি সম্পর্কে আরও তথ্য নিতে আরেকটি বিমান পাঠানো হলে সেটিও আর ফেরত আসেনি।

১৯৪৭ সালে আর্জেন্টিনা থেকে সান্তিয়াগো যাওয়ার সময় ব্রিটিশ সাউথ এয়ারওয়েজ এর “স্টার ডাস্ট” বিমানটি আন্দিজ পর্বতের উপর আঘাত হানে এবং গন্তব্যে পৌছতে পারেনি। গবেষণায় বলা হয়, ভিনগ্রহের কোন যন্ত্রের মাধ্যমে বিমানটিতে আঘাত ঘটানো হয়েছিল। এই ঘটনার ৫০ বছর পর আর্জেন্টিনার দুই ব্যক্তি বিমানটির কিছু ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়।

১৯৪৮ এ আবারও ব্রিটিশ সাউথ এয়ারওয়েজ এর “স্টার টাইগার” বিমানটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের উপর থেকে হারিয়ে যায়। বিমানটি খুবই খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে যাত্রা শুরু করে। এতো ধীরে যাওয়ার কারনে জ্বালানী ফুরিয়ে যেতে থাকে। এক সময় বারমুডার উপর অপর্যাপ্ত জ্বালানীর কারণে এটা বিধ্বস্ত হয়।

১৯৯৯ সালে ফ্লাইট ১৯১ শিকাগো থেকে যাত্রা শুরু করার কিছুক্ষনের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। সবচেয়ে আজব ব্যাপার হল, এরপর যত বিমান এই নামে করা হয়েছিল সবই গন্তব্যে যাওয়ার আগেই ধ্বংস হয়ে যায়।

১৯৪৯ সালে বারমুডা থেকে জ্যামাইকা যাওয়ার পথে ব্রিটিশ সাউথ এয়ারওয়েজ এর “স্টার এরিএল” বিলিন হয়ে যায়। বলা হয় যে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে প্লেনটির এ দশা হয়।

উরুগুয়ের একটি প্লেন খারাপ আবহাওয়ায় পরে আন্দিজ পর্বতে আছড়ে পড়ে। ৪৫ জনের মধ্যে মাত্র ১৬ জন ঘটনাস্থলে বাকিদের মৃতদেহ খেয়ে বেঁচেছিলেন। ১৯৯৩ সালে এই অবিশ্বাস্য ঘটনা নিয়ে একটি মুভিও করা হয়।

মিশরীয় ফ্লাইট ৯৯০ এর ক্র্যাশ করার ঘটনাটি অনেকটাই কাকতালীয়। পাইলট আর কো-পাইলটের মধ্যে বাক বিতণ্ডায় প্লেনটির এই হাল হয় বলে জানা যায়।

২০০৯ সালে আটলান্টিক মহাসাগরের উপর হারিয়ে যায় ফ্রান্স ফ্লাইট ৪৪৭। জানা যায় যে, বরফের খণ্ড বিমানের মুখ বন্ধ করে দেয় আর অটো পাইলট এর সাথেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যার কারনে বিমানটি গতিবিধি হারিয়ে সমুদ্রে পড়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ৫০টি মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ২০১১ সালে বিমানটির আরও কিছু অংশ পাওয়া যায় যেখান থেকে আরও ১৪৭ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বাদবাকি ৭৪ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন!
সূত্র : ওয়েবসাইট

মন্তব্য