প্রাণ ফিরলো খুলনার ছয় পাটকলে

file (3)

খুলনা: টানা ১০দিনের আন্দোলনের পর বৃহস্পতিবার মিলের উৎপাদন কাজে যোগদান করেছে শ্রমিকরা। আর এতে পুনরায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে খুলনার সরকারি ছয়টি পাটকল।

ঢাকা থেকে ফিরে স্ব স্ব মিলের শ্রমিক নেতারা বৃহস্পতিবার সকালে গেটসভা করে। সেখানে সচিবলায়ে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা এবং আন্দোলন সফল হওয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরেন শ্রমিক নেতারা। এছাড়া ধর্মঘট শেষে সকলকে কাজে যোগদানের জন্য বলা হয়। গেটসভা শেষে সকলেই কাজে যোগদান করেন। তবে, আলীম জুট মিল ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এখনও বন্ধ রয়েছে।

বকেয়া মজুরি পরিশোধ, পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দসহ পাঁচ দফা দাবিতে ৪ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ দিন মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে ধর্মঘট ও দু-দফায় ৬ দিন রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা। বুধবার বিকালে সচিবালয়ে পাট মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে শ্রমিক নেতারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।

এর আগে শ্রমিকরা রাস্তায় খোড়া মিছিল, রাজপথ-রেলপথ অবরোধ ও মিল ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে। এতে মিলগুলো অচল হয়ে পড়ে। তবে, ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর নতুন বছরের প্রথমদিনেই আন্দোলনে অংশ নেয়া খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, ইস্টার্ন, যশোর অভয়নগরের জেজে আই ও কার্পেটিং জুটমিলের শ্রমিকরা কাজে যোগদান করে।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন বাংলামেইলকে বলেন, ‘শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে খুলনা অঞ্চলের সরকারি সাতটি জুট মিলের শ্রমিক নেতারা সচিবলায়ে পাটমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে ফলপ্রসূ হওয়ায় আমরা আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগদান করেছি।’

আলীম জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম লিটু বাংলামেইলকে বলেন, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত জুটমিল শ্রমিকদের সকল দাবির সাথে আমরাও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছি। তবে, মিলটি ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর সংক্রান্ত জটিলতার কারণে আমাদের মজুরি প্রদান করা হচ্ছে না। সেই সাথে মিলটির উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরা আজ ৩৭ সপ্তাহ ধরে মজুরি না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন-যাপান করছে। শ্রমিকরা কোনো অবস্থায় মিলটি মালিকের কাছে হস্তান্তর হতে দেবে না। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব এস এম জাকির হোসেন বাংলামেইলকে বলেন, ‘৪ এপ্রিল থেকে লাগাতার ধর্মঘট পালন করে আসছি। সেই সাথে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ করেছি। বুধবার মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে শ্রমিকদের রোববারের মধ্যে চার সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ, ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সকল বকেয়া মজুরি ও মহার্ঘভাতা পরিশোধ, পর্যায়ক্রমে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়া আলীম জুট মিলের আইনি জটিলতার কারণে মিলটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে, মিলটির বিষয়ে একটি সন্তোষজনক আলোচনা হয়েছে। আর বাকি ছয়টি জুট মিলে আজ সকাল থেকে শ্রমিকরা উৎপাদনের কাজে যোগদান করেছে। এর ফলে মিলগুলোর প্রাণ ফিরে পেয়েছে।’

মন্তব্য