সন্ত্রাসী ভাড়া করে স্বামীকে খুন, ৭ মাস পর লাশের খোঁজ

2016_06_14_18_19_21_uL1R0XhdFmXqztIaUNnxJBCDwv7Qj7_original

কুমিল্লা: নিখোঁজ হওয়ার সাড়ে সাত মাস পর পচা-গলা লাশ মিললো মুরাদনগরে ময়নাল হোসেন নামে এক প্রবাসীর। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের জারেরা গ্রামের বিলের মাঝে খালের পানি সেচে মাটির নিচ লাশ উত্তোলন করা হয়।

গত বছরের ১ নভেম্বর রাতে শ্বশুর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ময়নাল হোসেনকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। টাকা পয়সার বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী ভাড়া করে স্বামী খুন করেন স্ত্রী। ঘটনায় জড়িত সন্দেজে আটকদের স্বীকারুক্তির ভিত্তিতেই এতোদিন পর লাশের সন্ধান মিললো।

ময়নাল নিখোঁজ হওয়ার পর প্রথমে স্ত্রী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ময়নালের মা আমেনা খাতুন কুমিল্লা পুলিশ সুপার বরাবর একটি আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম তদন্ত শুরু করেন। এক পর্যায়ে তদন্তের দায়িত্ব যায় ডিবির এসআই সহিদুল ইসলামের হাতে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম জানান, মুরাদনগর উপজেলার আকাবপুর নোহাটি গ্রামের প্রবাসী ময়নাল হোসেনের সাথে প্রায় ১০ বছর আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার জাড্ডা হাহাতি গ্রামের মেয়ে তাছলিমা বেগমের। তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলে। সৌদি যাওয়ার পর ময়নাল স্ত্রীর কাছেই টাকা পাঠাতেন।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর দেশে আসার পর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে টাকার হিসাব নিয়ে বসেন ময়নাল। এবার শুরু হয় কলহ। এর জেরে স্ত্রী ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে সন্ত্রাসী ভাড়া করে ১ নভেম্বর রাতে ময়নালকে হত্যা করে লাশ গুম করে।

হত্যার সাড়ে ৭ মাস পর খলের ৩ ফুট পানির নিচে লাশের সন্ধান পেল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী আজগরের উপস্থিতিতে লাশ তোলা হয়।

এসআই সহিদুল ইসলাম জানান, ময়নালের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার (কারাগারে আটক), আটক জাকির ও জুয়েলসহ অপর দুই আসামির স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে লাশ গুম করার স্থানটি জানতে পারে ডিবি পুলিশ।

মঙ্গলবার ময়নালের লাশ উত্তোলনের সময় কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. আলী আশরাফ ভূইয়াসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, এসআই সহিদুল ইসলামসহ ডিবির একটি টিম ময়নালের স্ত্রী তাছলিমাকে গ্রেপ্তার করার পরই তার স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে হত্যার রোমহর্ষক কাহিহি। তাছলিমার কথিত প্রেমিক শরিফুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়। গত ১০ মার্চ নিহতের তাছলিমা জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে তছলিমার নিকটাত্মীয় এবং ঘাতক জাকির ও জুয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মন্তব্য