খালেদার ঐক্যের আহ্বানে ‘মস্তবড়’ আন্দোলনের সুযোগ

2016_07_16_20_08_22_bGptOrrMyRFFoW6KNQsARQHiOdqH04_original

ঢাকা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, ‘দেশের বর্তমান সঙ্কটকালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে একটা ‘মস্তবড়’ আন্দোলনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটি মস্তবড় সুযোগ, এটি একটি মুভমেন্ট। জাতীয় ঐক্যের মুভমেন্ট। এই আন্দোলনকে সফল করার জন্য প্রত্যেকের বুদ্ধিভিত্তিক চিন্তা-ভাবনা মিলিয়ে অগ্রসর হওয়া দরকার।’

গুলশান হামলার প্রেক্ষিতে দেশের সঙ্কটকালে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছেন- এমন দাবি করে এমাজউদ্দীন বলেন, ‘হামলার দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত স্বপদ থেকে সরে দাঁড়ানোই হবে তার জন্য ‘ন্যায়ের পথ’।’

শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) গোলটেবিল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এমাজউদ্দীন। ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন’-শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব।

গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টেনে এমাজউদ্দীন বলেন, ‘দেশের এই সঙ্কটকালে মানুষ প্রত্যাশা করেছিল, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়া হবে। কিন্তু তারা সেটা পারেনি। পারেনি এই জন্য বলছি যে, বরাবর তারা বলেছে- বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু জঙ্গিবাদ তো দেখা দিলো।’

এ প্রসঙ্গে ঢাবির এই সাবেক ভিসি বলেন, ‘জঙ্গিবাদকে সামনে রেখে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তারই তো উচিত ছিলো, জাতীয় পর্যায়ে একমত হওয়ার জন্য সবাইকে একত্রিত করা, সহমত প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এই ব্যর্থতাকে মূলধন করে তার উচিত হবে ‘সরে যাওয়া’। আর এটাই ন্যায়ের পথ। সুতরাং তার আর ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।’

দেশের বতমান পরিস্থিতিতে জাতীয় পর্যায়ে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য- এমন মন্তব্য করে বিএনপি ঘরানার এই বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বেগম খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে একটা মস্তবড় আন্দোলনের সুযোগ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের এই আন্দোলনকে যদি সফল করতে পারি, তাহলে গত আট বছরের মধ্যে আমরা যা কিছু হারিয়েছি, তার সবকিছুই ফেরত পাবো।’

ঢাবির সাবেক এ উপাচার্য বলেন, ‘গত আট বছরে দেশ থেকে আমরা অনেক কিছু হারিয়েছি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলা হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নিঃশেষ করা হয়েছে। আইনের শাসন বাংলাদেশে এখন কল্পনার ব্যাপার। কোনো এককালে হয়তো এটা ছিলো, এখন আর নেই। ব্যক্তি অধিকার নিশ্চিহ্ন হয়েছে। আমরা ভয়ঙ্কর একটা আশঙ্কার মধ্য দিয়ে চলেছি। আমরা প্রত্যেকেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’

ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. একেএম আজিজুল হকের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাবির সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ড্যাব সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ।

মন্তব্য